ঐতিহ্যঃ
প্রাচীন ও মধ্যযুগের গোলাপগঞ্জের কোন পৃথক ইতিহাস অদ্যাবধি রচিত হয়নি। তবে প্রাচীন শ্রীহট্টের অংশ হিসাবে এর ইতিহাস সিলেট অঞ্চলের ইতিহাস থেকে ভিন্ন নয় বলেই মনে হয় । খ্রিষ্টীয় ৭ম শতাব্দী পর্যন্ত সিলেট কামরুপ রাজ্যের অর্ন্তগত ছিল। প্রাচিন সিলেটে প্রথমে অষ্ট্রিকগণ এবঙ পরে মঙ্গোলীয় গোত্রের লোকদের বসতি গড়ে উঠে। ৬১৪ খ্রীষ্টাব্দে ত্রিপুর রাজ ধর্মপাল এবং ৭৩২ খ্রীষ্টাব্দে গৌড়াধিপতি আদিশুর (জয়ন্ত) কর্তৃক বৈদিক ব্রাহ্মণ আনয়নের মাধ্যমে এ অঞ্চলে আর্য সভ্যতার অনুপ্রবেশ ঘটে। গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিন,রায়গড়, কানিশাইল, নিজ ঢাকাদক্ষিন,পালপাড়া প্রভৃতি গ্রামে এই বৈদিক ব্রাহ্মণদের বংশধরগণ বসবাস করতেন। পাঠান ও মুগল যুগে গোলাপগঞ্জের ঢাকদক্ষিণে বহু সংখ্যক বেদজ্ঞ পন্ডিত ব্রহ্মণদের বসবাস ছিল এবং এদের প্রচেষ্টায় ঢাকাদক্ষিন বৈদিক শিক্ষার এক ঐতিহাসিক কেন্দে পিরনত হয়েছিল। ষোড়শ শতকে এই ঢাকাদক্ষিনেরই পন্ডিত জগন্নাথ মিশ্রের কৃতি সন্তান শ্রী চৈতন্য (বিশ্বম্ভর মিশ্র) বাঙালির আধ্যতিক জীবনে এক বৈপ্লবিক যুগের সূচনা করেন। ব্রাহ্মণ্যবাদ ও উগ্র বর্ণবাদের বিরুদ্ধে শ্রী চৈতন্য পরিচালিত গণবিপ্লবে বাংলার আপামর জনসাধারণ বিপুলভাবে সাড়া দিয়েছিলেন। শ্রী চৈতণ্রের সমকালে এবং এর বহুকাল পূর্ব থেকে নবদ্বীপে ঢাকাদক্ষিণের বহু বেদজ্ঞ অধ্যয়ন কিংবা অধ্যাপনার নিমিত্তে বসবাস করতেন। ঢাকাদক্ষিনের রত্নগর্ভ আচার্য্য সে সময় নবদ্বীপে বসবাসকারী এক পন্ডিত ছিলেন। তাঁর পুত্র যদুণাথ কবিচন্দ্র প্রসিদ্ধ বৈষ্ঞব পদকর্তা ছিলেন। তাঁর রচিত পদকল্পতরু এক বিখ্যাত বৈষ্ঞব কাব্য। পরবর্তীতে ঢাকাদক্ষিনের প্রদ্যুম মিশ্র ( শ্যী চৈতন্যের জেঠতুতো ভাই) রচিত শ্রীকৃষ্ঞচৈতন্যোদয়াবলী এবং জগজ্জীবন মিশ্র রচিত মনো:সন্তোষিনী বৈষ্ঞব সাহিত্য দুটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস